মশা নিধনে অধিদপ্তর নয়, সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনা
ঢাকা: ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশাসহ অন্যান্য মশা নিধনে কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর না করে ইন্ট্রিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানজমেন্ট (সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনা) করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
বুধবার (২৫ আগস্ট) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশন ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়বিভাগ, দপ্তরসংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার ১১তম আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় তিনি একথা বলেন।
সভায় ঢাকার দুই সিটি মেয়র ছাড়াও গাজীপুর সিটি মেয়র, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নয়, ইন্ট্রিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানজমেন্ট করতে যাচ্ছি। এটার জন্য কাজ চলছে। সারা দেশের জন্য এটা করব। আমাদের কাছে ভরসার জায়গা হলো গ্রামে এডিস মশার বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভবনা খুবই কম। যেখানে নিচে মাটি আছে, সেখানে মশা ডিম পাড়লেও তা ফুটবে না। পরিবেশের ক্ষতি না হয় সেটা মাথায় রেখেই আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে।
মশার বিস্তৃতি নিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয়ে গ্লোবাল সিনারিও অনুযায়ী আমাদের মন্দের ভালো। একটা সন্তুষ্টির জায়গা হলো আমরা এই পর্যায় পর্যন্ত রাখতে পেরেছি। বৃষ্টি বেশি হলে সমস্যা না, যদি ভারী বৃষ্টি হয়। থেমে থেমে বৃষ্টি হলে, পানি জমা থাকলে সমস্যা। যদি ছাদ বাগান করেন তাহলে ফুলের টবের মধ্যে কয়েক ফোঁটা কেরোসিন তেল দিয়ে দেন। এর ফলে প্রতিদিন পানি সরাতে হবে না। কেরোসিন দিলে সেখানে লার্ভা হবে না।
আগে একটা কোম্পানিকে কীটনাশক আমদানির অনুমতি থাকলেও এখন তা ওপেন করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এখন কিছু বেসরকারি কোম্পানি সেই কীটনাশক আনছে, সেগুলো দোকানে দোকানে বিক্রির ব্যবস্থা করব।
তিনি বলেন, ২০২০ এর তুলনায় এবার ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে। লকডাউনের কারণে নির্মাণাধীন বাড়ির কাজ বন্ধ থাকা, অনেক নগরবাসীর বাসা খালি রেখে গ্রামের বাড়িতে চলে যাওয়ায় এবার এডিস মশা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। উচ্চশিক্ষিত মানুষ অনেকের বাসায় প্রচুর লার্ভার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, যা দুঃখজনক।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, আমরা ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করছি। সারা বছর কীভাবে ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট করতে পারি সেই পরিকল্পনা আমরা করেছি। সবাইকে বাসা-বাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে। ইন্ট্রিগেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্টের জন্য আমরা স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠাবো, আপনি এটা বিবেচনা করবেন। আমরা মনে করি ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে শহরকে নিরাপদ করতে পারবো।
আতিকুল ইসলাম বলেন, নির্মাণাধীন বাড়িতে ডেঙ্গুর বেশি লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। লার্ভা পাওয়ায় কোনো কোনো নির্মাণাধীন ভবন মালিককে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হচ্ছে, কিন্তু ওখানে তারা ৫০ টাকার কেরোসিন ছিটিয়ে দিলে এই জরিমানা হয় না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে হটস্পট দেয়, সেটিকে আরও আগে কীভাবে দেওয়া যায়। সেটি আগে দিলে আমরা অন্যভাবে পরিকল্পনা করতে পারি।