২ হলের নির্মাণ কাজ বন্ধ করার ঘোষণা ছাত্রলীগ নেতাদের
আকাশ খবর ডেস্ক:
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন উন্নয়ন প্রকল্পের দুটি হলের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে অবস্থানরত সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে করা মানববন্ধন থেকে।
সোমবার বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধন থেকে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমিটির সদস্য শাহীন হোসাইন সাজ্জাদ। দফাগুলোর মধ্যে রয়েছে, ৭ দিনের মাঝে নিম্নমানের কাজ ও সময়ক্ষেপণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত ও রিপোর্ট পেশ, ১৫ দিনের মধ্যে হলগুলো বুঝিয়ে দেওয়ার মুচলেকা দিতে হবে অন্যথায় সব কাজ বন্ধ করা হবে, এলেমেল ও পরিবেশ ধ্বংসকারী মাস্টার প্ল্যান পরিবর্তন করে শিক্ষার্থীদের সমর্থন নিয়ে সুপরিকল্পিত প্ল্যান গ্রহণ করতে হবে, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ঢেকে যায় বা আড়াল হয় এমন স্থাপনা করা যাবে না, নবনির্মিত গেস্ট হাউজের স্থান পরিবর্তন করতে হবে, মসজিদের কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে, ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশ ও অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ ওঠায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্তে কমিটি গঠন ও ব্যাবস্থা করতে হবে।
অভিযুক্ত পরিকল্পনা দপ্তর প্রধান প্রৌকশলী হাফিজুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের দুটি হলের নির্মাণ কাজ আটকে রেখেছে শিক্ষার্থীরা।
তবে কারা বন্ধ করেছে তাদের নাম বলতে চাননি তিনি। তিনি বলেন, এর আগেও অনেকবার কাজ বন্ধ করা হয়েছে। আর এই করোনার সময় সম্পূর্ণ শক্তিতে কাজ করা যাচ্ছে না। সামাজিক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই কাজ করতে হচ্ছে। তবে আমাদের কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন বাধা আসলে কাজের শক্তি থেমে যাবে। যারা আটকে রেখেছে তাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে আমাদের কাজ করতে দিন অতি দ্রুতই সম্পন্ন করতে পারব আমরা। আমার বিষয়ে তদন্ত হোক তাতে আমার কোনো বাধা নেই আমাদের কাজ করতে দিলেই শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধান সম্ভব।
কাজ কারা বন্ধ করেছে, কেন বন্ধ করেছে প্রশ্নের জবাবে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, কারা এমন করছে তাদের অনুসন্ধান চলছে। করোনার এই সময়ে সরকারি কাজ বন্ধ করা উচিত নয়। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়বে।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অভি সাব্বির মানবন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্যে বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমি একমত পোষণ করি। এটা একটা যৌক্তিক দাবি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বারবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে, যার সঙ্গে কিছু প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাও জড়িত আছে। আমি এর সুষ্ঠ তদন্ত দাবি করছি।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন অগ্নিবীণা হল ছাত্রলীগের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক আশরাফুজ্জামান পারভেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমিটির সদস্য শাহীন হোসাইন সাজ্জাদ ।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলা অনুষদ ছাত্রলীগের সভাপতি আবু নাঈম আব্দুল্লাহ ।
মানববন্ধনে ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই উন্নয়ন প্রকল্পের দুটি হলের কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
উল্লেখ্য দুটি হল নির্মাণ কাজ ২০১৬ সালে শুরু হয়ে ১৮ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। হল নির্মাণে কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভাওয়াল কন্সট্রাকশন। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণেও আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল শিক্ষার্থীদের নামে, তবে কোন শিক্ষার্থীরা আটকিয়ে রেখেছিলো প্রশাসন তাদের নাম বলেনি। অন্যদিকে পরিকল্পনা দপ্তর প্রধানের নামে আগেও অভিযোগ করেছিল শিক্ষার্থীরা।